বাংলাদেশ ওয়ানডের মেজাজে খেললেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেন টেস্ট ম্যাচের ধীরস্থির ভাব নিয়েই শুরু করেছিল। ২৯৪ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুর তিন ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট ছিল যথাক্রমে ৫২.৯৪, ৫১.৬১, এবং ৫৬.৭৫—যা দেখে মনে হচ্ছিল, ম্যাচটি হাতছাড়া হতে চলেছে।
তবে ক্রিকেট যে চমকের খেলা, সেটিই প্রমাণ করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেরফান রাদারফোর্ড। ৮০ বলে ১১৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংসে আট ছক্কা ও সাত বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন একেবারে ভেঙে দিলেন। তাঁর ইনিংসের ওপর ভর করেই ২.২ ওভার বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা।
৪৬তম ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ২৭০/৪। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। সৌম্য সরকারের ৪৭তম ওভারে রাদারফোর্ড প্রথম বলেই ২ রান নেন, সঙ্গে ওভারথ্রোতে বল বাউন্ডারি পেরিয়ে যুক্ত হয় আরও ৪ রান। এই রানেই মাত্র ৭৭ বলে তিনি পূর্ণ করেন নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। একই ওভারে আরও দুটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচটিকে সহজ করে দেন। যদিও ওভারের চতুর্থ বলে নাহিদের ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরতে বাধ্য হন, কিন্তু তখন তাঁর কাজ প্রায় শেষ।
বাংলাদেশের বোলাররা শুরুর দিকে ভালোই নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। তানজিম হাসান ও নাহিদ রানার আগুনে পেসে শুরুতে ফিরে যান এভিন লুইস ও ব্রেন্ডন কিং। কিন্তু এরপর অধিনায়ক শাই হোপের ৮৮ বলে ৮৬ রানের ইনিংস এবং রাদারফোর্ডের সঙ্গে তাঁর ৯৯ রানের জুটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের ইনিংসে তানজিদ হাসান, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, এবং জাকের আলীর ব্যাটিংয়ে দল ২৯৪ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে। মিরাজ ১০১ বলে ৭৪ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলে মিডল অর্ডারে ভরসা যোগান। আর শেষদিকে মাহমুদউল্লাহর ৫০ রানের ঝোড়ো ইনিংস ও জাকের আলীর ৪৮ রানের অবদান দলকে প্রতিযোগিতামূলক স্কোর এনে দেয়।
তবে শেষ পর্যন্ত রাদারফোর্ড-হোপের ঝড়ে সেই স্কোরও যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি। ২০১৮ সালের পর ওয়ার্নার পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেল। সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে হতাশায় ডুবতে হলো মিরাজের দলকে।