সিডনিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন!

প্রতি বছর ৮ মার্চ পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস বা International Women’s Day। চলতি বছরে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের থিম ছিল পরিবেশ আন্দোলন এবং পরিবেশ রক্ষায় নারীর অবদান। সারা বিশ্বে এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়।
নারীরা আজ নিজ যোগ্যতা বলে স্বমহীমায় নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন, নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসার সামলানো থেকে শুরু করে দেশ কিংবা বৃহৎ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান চালানো, সমস্তটাই নারীরা করছেন সুচারুরূপে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীর অবদান, তাদের ভূমিকার প্রতি সম্মান জানাতেই এই দিনটি উদ্যাপন করা হয়।

নারী…
সে এগিয়ে চলে শত বাঁধা পেরিয়ে।
সে একই সাথে পদচারণা করে বাস্তবে ও কল্পনায়।
সে কখনো ফুল হাতে নিয়ে শাড়ি পড়া অনিন্দ্য কোমল চারুলতা। আবার কখনো বুদ্ধির ঝিলিকে হার মানায় কর্পোরেট বাস্তবতাকে।
“কোন কালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি; শক্তি দিয়াছে, প্রেরণা দিয়াছে, বিজয় লক্ষ্মী-নারী”(কাজী নজরুল ইসলাম)।


লৈঙ্গিক সমতার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের স্বীকৃতি দানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য উদযাপনের উদ্দেশ্যে নানা আয়োজনে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিনটি। এ বছরের নারী দিবসে জাতিসংঘের স্লোগান ‘নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ’। দিবসটি উদযাপনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সাবেক কাউন্সিলর ও বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ জামান টিটু এবং নব নির্বাচিত কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা। নারী দিবসের এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছাসহ স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মাল্টিকালচারাল মন্ত্রী মার্ক কুরি। অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন সংসদ সদস্য উইন্ডি লিন্ডসি, এমপি এন্থনী স্টিফেন, টনি বারক,কনস্যুলেট জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম, টেলিঅজ প্রধান জাহাঙ্গীর আলম ও মেয়র খাল আসফুর প্রমুখ। এতে সিডনির বাংলাদেশী কমিউনিটিসহ সকল কমিউনিটির মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে আলাদা বিশেষত্ব প্রদান করে কেক কাটার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন শুভসূচনা করা হয়। নারী অধিকার সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।



নারী দিবস উপলক্ষে ৮ই মার্চ সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানে নারী নেতৃবৃন্দ, সমাজকর্মী, সমাজের গণমান্য নারীদের সম্মানিত করা হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাণীতে বক্তারা বিশ্বের সকল নারীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন,নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। অভিনন্দন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার নারী পরিষদ এবং সুন্দর বাংলাদেশ কমিউনিটিকে।


গত শতাব্দীর শুরুতে নারী জাগরণের সঙ্গে সঙ্গে নারী দিবসের ধারনার উত্থান। বছর পরম্পরায় নারীদের অধিকার চাওয়ার এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায় এবং জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে ‘আন্তর্জাতিক নারী বর্ষ’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ নেয়। আজ বিশ্বের সকল নারী সংগঠন ও সকল রাষ্ট্র ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করে। সারাবিশ্বে তাই আজ বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি। নারীর প্রতি সবরকম বৈষম্য ও অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটিয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার কাজে পুরুষের সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আরও বেগবান হোক,রোজ হোক নারী দিবস। যে সব নারী সকল বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের সকলের প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা,নারী দিবসে শুভকামনা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য….
[ভাইটাল আহমেদ, সিডনি ]
- « মুরাদপুরে মাদ্রাসা থেকে ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার।
- নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ;পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জয় অস্ট্রেলিয়ার »