মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের খাদ্য সংকট কেটে যাচ্ছে, করোনা চিকিৎসায় সুস্থতা ৪৫ শতাংশের বেশি

ইউরোপীয় দেশগুলোতে যখন করোনায় মৃত্যুর মিছিলে শামিল হচ্ছে তখনই দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ মালয়েশিয়ায় করোনায় আক্রান্তরা সুস্থ হচ্ছেন প্রতিদিন।করোনা ভাইরাসকে পরাজিত করে চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে সেদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও কমছে প্রতিদিন। মৃত্যুর হারও আগের মত আর নেই। আর যাদের মৃত্যুু হচ্ছে তাদের অধিকাংশই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত আগে থেকেই।যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোন চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে মালয়েশিয়া দেখাচ্ছে চমক।

আর সেই চমকেই মালয়েশিয়ায় আতঙ্কে বদলে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে সবার মাঝে। যেখানে আগে প্রতিদিন ২ শতর বেশি আক্রান্ত হতো সেখানে বর্তমানে কমে গেছে বহু অংশে।

এছাড়াও আইসিইউতে চিকিৎসাধীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে সুস্থ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত।

তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেদেশে চলছে লকডাউন, মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমপিও)। মঙ্গলবার সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী করোনাই আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৯শত ৭৮ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৪ শত ৭৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৮২ জনের।
ইতিমধ্যেই সেদেশের সরকার কর্তৃক ঘোষণাকৃত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবেন সেদেশের নাগরিক ছাড়াও বিদেশি অভিবাসীদের জন্য ভিসা ফি (লেভি) ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে চালু করা হচ্ছে বিভিন্ন কল কারখানা। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেই খুলে যাবে সব।এদিকে করোনার বিধিনিষেধের ফলে সেদেশে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিদের মধ্যে খাদ্য সংকট তৈরি হলে এগিয়ে আসে কমিউনিটি সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে যার যার মত খাদ্য সহায়তায় পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। চালাও অনলাইনে খাদ্য সহায়তার জন্য ফরম ফিলাপের জন্য ওয়ান করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন।ইতিমধ্যেই সেদেশের অবস্থান করা বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিরলস চেষ্টাসহ খাদ্য সহায়তা করে যাচ্ছেন হাইকমিশন। এছাড়াও যেসব মালিকগণ তাদের বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে সেইসব মালিকপক্ষকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে তদারকি করা হচ্ছে এবং সেদেশের সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। যাতে সে দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের কোন প্রকার অভুক্ত না থাকতে হয়। বিগত দিনে মালিশের সরকারের দেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে মালিকের বদলে বিভিন্ন এজেন্টের নামে ভিসা করে বিপদে পড়ে বাংলাদেশিরা। আজ করোনার বিধিনিষেধের কারণে তারা বেতন না পাওয়ায় সাময়িক সমস্যায় ভুগছেন। তবে বিভিন্ন সংগঠনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণের কারণে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে এগোচ্ছে।এছাড়াও সেদেশের বিভিন্নএনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশী অভিবাসীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে। যে কারণে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের মাঝে। অন্যদিকে তৃতীয় মেয়াদে শুরু হচ্ছে লকডাউন ১৫ ই এপ্রিল থেকে। বিগত দিনের থেকে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে শুরু করেছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব আজ এ ঘোষণা দিয়েছেন।অমান্যকারীদের কোনো সতর্কতার নোটিশ না রিমান্ডে নেওয়ার পর সোজা আদালতে সোপর্দ করবে পুলিশ।মালয় মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুত্রজায়া থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী ইসমাইল বলেন, আজই নতুন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অনেকে লকডাউন অমান্য করছেন দেখে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি, লোকজন এমন আচরণ করছে যেন তারাআইনের তোয়াক্কাই কিংবা ভয় করছে না। তাদের ভয় পাওয়ার জন্য ১ হাজার রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ান) খুব বেশি মনে হচ্ছে না। তারা প্রতিনিয়ত চলাচলের নির্দেশনা (এমসিও) লঙ্ঘন করছেন।যারা আইন অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। এদিকে মালয়েশিয়ার পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, যদি জনগণ চলমান মুভমেন্ট কন্ট্রোল অডার (এমসিও) অমান্য করে তাহলে আমরা এটি বাড়িয়ে জুন পর্যন্ত নিয়ে যাব। ১৪-০৪-২০২০ ইং