বাংলাদেশিসহ ব্রিটেনে সংখ্যালঘু ডাক্তারদের বেশি মৃত্যুর তদন্ত দাবি

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে যুক্তরাজ্যে যে চিকিৎসকরা মারা গেছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশইসংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ডাক্তার। এ খবর নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) সঙ্কট নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে প্রথম সতর্ক করেছিলেন আব্দুল মাবুদ চৌধুরী। তিনিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে ১৯ জন ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) কর্মী মারা গেছেন, তাদের মধ্যে প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া ১০ জন ডাক্তারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
এর কারণ জানতে ব্রিটেনে চিকিৎসকদের সমিতি ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। বিএমএ বলেছে এটা কাকতালীয় বলে মেনে নেয়া কঠিন হচ্ছে, কারণ তুলনামূলক হিসাবে এত বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিএমএর সভাপতি ডা. নাগপল বলেন, তদন্ত করে দেখা উচিত এই ভাইরাস থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু) মানুষের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি কিনা।
করোনায় মৃত্যুবরণ করা আব্দুল মাবুদ চৌধুরী ১৫ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তিনি একজন লোকিউম ইউরোলজিস্ট ছিলেন। লন্ডনের রমর্ফোডের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
এর আগে তিনি মার্চের ১৮ তারিখ এক চিঠি লেখেন বরিস জনসনকে। সেখানে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কর্মীদের জরুরিভিত্তিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের প্রয়োজন। নাহলে অনেক ডাক্তার নার্স মারা যাবেন। তিনি লেখেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি রোগীদের সঙ্গে কাজ করেন। রোগমুক্ত পৃথিবীতে পরিবারের সঙ্গে তাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
ডা. আব্দুল মাবুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে দেশটির এক ডাক্তার ফেসবুকে লেখেছেন, নিজেই চলে গেলেন ডাক্তার মাবুদ চৌধুরী। তিনি বরিস জনসনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন পিপিইর অভাবে অনেক ডাক্তার মারা যাবেন। ডাক্তার মাবুদ মরিয়া প্রমাণ করিলেন তিনি সত্য বলিয়াছিলেন।
যুক্তরাজ্যে বিপুল পরিমাণে ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) সঙ্কট রয়েছে। চিকিৎসাসেবা দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই অর্থাৎ পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্টের অভাব প্রকট হয়ে ওঠেছে। যেভাবে দ্রুতগতিতে সে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ, তাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় কর্তৃপক্ষ। তবে এসব সমস্যাকে পাত্তা না দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যান চিকিৎসকরা।
- « আমিরাত থেকে ঢাকাগামী বিমানের ফ্লাইট ১মে পযর্ন্ত স্থগিত
- দুবাই পুলিশের করোনাভাইরাস সম্পর্কে শিক্ষামূলক প্রচারণা »