ছাত্র রাজনীতির হালচাল লিখেছেন সরওয়ার আলম সাজ্জাদ

কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে লক্ষ্য করছি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রনেতারা লিখছেন – অমুক ক্যাম্পাসে আসলে মাইর হবে!! তমুকরে পিডাইতে হবে!! অমুক গ্রুপের পোলাগো শিক্ষা দিতে হবে!! তমুক গ্রুপের পোলার ঠ্যাং ভাইঙ্গা দিমু!! মাইর হবে!! বহুত দিন পিডাই না!! আরো অনেক ধরনের কথা। এ সব কিছু দেখেই ভগ্ন হৃদয়ে কিছু লিখছি…। ছাত্র রাজনীতি রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদেশের স্বাধীকার আন্দোলন গুলোতে ছাত্রদের ভুমিকা অবিস্বরণীয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম সহ সকল অধিকার রক্ষার আন্দোলনেই ছাত্রদের ভুমিকা ছিল অগ্রগন্য। ছাত্ররা যুগে যুগে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়, নিপিড়িত মানুষের মুক্তি, শোষক শ্রেণীর শোষনের বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিল।
ছাত্র রাজনীতির হালচাল লিখেছেন সরওয়ার আলম সাজ্জাদ
তাই এদেশের রাজনীতিতে ছাত্রদের অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। তৎকালীন ছাত্র রাজনীতি ছিল অধিকারের কিন্তু বর্তমান ছাত্র রাজনীতি আধিপত্যের! অধিকারের রাজনীতি আর আধিপত্যের রাজনীতিতে পার্থক্য এই যে, অধিকারের রাজনীতি মানুষের জন্য,সেবার জন্য, নিপিড়িত মানুষের জন্য, ন্যায়ের জন্য আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চা। পক্ষান্তরে আধিপত্যের রাজনীতি এর ঠিক উল্টো। নিজেকে ঘিরেই আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে হিংস্র প্রবৃত্তির আদর্শহীন রাজনৈতিক মদদপুষ্ট অপচর্চা। দুঃখের বিষয় হল আজকাল ছাত্ররা অধিকারের রাজনীতি চর্চা না করে বরং আধিপত্যের রাজনীতিতে লিপ্ত। তাইতো তারা নিজ দলেই বিভিন্ন উপগ্রুপে বিভক্ত! অন্য দলের রাজনীতি যেন সবচেয়ে বড় অন্যায়!! ভিন্নমত পোষনকারীকে এখানে চিরশত্রু রুপে বিবেচনা করা হয়। রাজনীতি চর্চাকারীদের চরিত্রের অস্বাভাবিক স্থলন!! অন্যায় অনাচারের লক্ষ্যেই যেন তারা রাজনীতি করে!! অথচ অধিকারের রাজনীতিতে ভিন্নমত পোষনকারী একে অন্যের পরিপূরক। একই আদর্শে অনুপ্রানিত সকলে ঐক্যবদ্ধ। তাদের আচরন হবে অনুসরণীয়। কিন্তু এসব কিছু কোথায় আজকাল?? পত্রিকা খুললেই দেখি ছাত্রদের নানা অপকর্ম, হানাহানি, আধিপত্যের লড়াই!! বড়ই ব্যাথিত হই এসব দেখে। ছাত্র রাজনীতির এরুপ অবক্ষয়ের ফলেই রাজনীতিতে ছাত্রদের গুরুত্ব আজ বিলীন। যে যার মত করেই ছাত্রদের ব্যবহার করছে। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের হাতে চলে যাচ্ছে রাজনীতি। ছাত্ররা নেতৃত্ব দেওয়ার পরিবর্তে সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী শ্রেণীর দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। তাদের হাতের ইশারায় খুন করছে নিজের সহপাঠীকে। নিজের বন্ধুর রক্তে রন্জিত হচ্ছে ছাত্রদের হাত। খুব শিঘ্রই এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে রাজনীতিতে ছাত্রদের কোন মূল্য থাকবেনা। দেশের নীতিনির্ধারণে ছাত্রদের কোন ভুমিকা থাকবেনা। ছাত্ররা লাঞ্চিত হবে সর্বক্ষেত্রে। ইতিমধ্যে তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য ছাত্রদের আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে অধিকার আদায়ের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। ভিন্নমত পোষনকারীদের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। অন্যের মতকে সম্মান করতে হবে এবং জাতিগত সমস্যা সমাধানে সকল দল মতের বাইরে গিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। এদেশ আমাদের সকলের, এদেশের মাটির পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ধর্ম বর্ণ দল নির্বিশেষে পাশাপাশি থেকে ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবেই ছাত্ররা নিজেদের সম্মান অক্ষুন্ন রেখে দেশ ও জাতির গঠনমূলক উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারবে। ছাত্রদের রাজনীতি হোক শৃঙ্খলার, হোক অধিকারের, হোক ন্যায়ের, হোক মজলুমের, হোক আদর্শের। ছাত্রদের রাজনীতি দেশের জন্য দশের জন্য। শুভ কামনা সকল ছাত্রদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা। মতামত /১৬-০১-২০২০ ইং
- « স্বাধীন কন্ঠ অনলাইন টেলিভিশনকে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার উপহার দিল বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল ইন্সুরেন্স কোম্পানি চাটার্ড লাইফ
- হিউমিনিটি ৯৭’৯৯ সংগঠনটির উদ্যোগে অসহায় গরীবদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ »