চট্টগ্রাম বন্দরের নিলাম শেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

চট্টগ্রাম বন্দরের একটি নিলাম শেডে ভয়াবহ ও রহস্যজনক আগুনে নিলামযোগ্য এবং নিলামে বিক্রি করা বিপুল পরিমাণ পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার বিকালে বন্দরের ২ নম্বর গেটের কাছে ৩ নম্বর শেডে লাগা এ আগুন প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট, নৌবাহিনীর একটি ইউনিট এবং ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টের কাপড়, দামি মেশিনারিজ ও কেমিক্যাল। এসব পণ্যের মূল্য কত বা অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কিভাবে হল তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলমের নেতৃত্বে এ কমিটি করা হয়। কমিটিকে তদন্তপূর্বক দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, ওই শেডে ১৫-২০ বছরের পুরনো ধ্বংসযোগ্য ও নিলামযোগ্য বিপুল পরিমাণ পণ্য ছিল। কোন পয়েন্ট থেকে কিভাবে আগুন লাগল, এতে কি পরিমাণ ক্ষতি হল তদন্ত রিপোর্ট পেলেই তা পরিষ্কার হবে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, শেডের পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের শ্রমিকরা রান্না-বান্নার কাজ করেন। সেখান থেকে অসতর্কতাবশত আগুন লাগতে পারে। আবার অন্য একটি সূত্র বলছে, ওই শেডে নিলামযোগ্য ও দাবিদারহীন পণ্য ছিল। শেড থেকে বিভিন্ন পণ্য প্রায় সময় চুরি হয়। প্রমাণ নষ্ট করার জন্য কুচক্রী বা চোর সিন্ডিকেটের কেউ আগুন লাগিয়ে দেয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়া যায়নি। তবে তদন্তে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ২ নম্বর গেটের কাছে ৩ নম্বর নিলাম শেডটি অবস্থিত। ৩০ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি বড় নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওই নিলামের বেশ কিছু পণ্য ছিল এই শেডে। এ ছাড়া গার্মেন্ট আইটেম, কেমিক্যাল ও মেশিনারিজসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য ছিল। দাবিদার বা মালিকবিহীন অনেক পণ্যও ছিল এর মধ্যে। যেগুলো ধ্বংসযোগ্য। বুধবার বিকাল ৪টায় ওই শেডের এক পাশ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেন আশপাশের লোকজন। দেখতে দেখতে এই ধোঁয়া বাড়ছিল। খবর পাওয়ার প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব ফায়ার ফাইটাররা সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। পরে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউটিনের ১৪টি গাড়ি যোগ দেয়। যে শেডে আগুন লেগেছে সেই শেডের চেয়েও আশপাশের কোনো শেডে যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে বিষয়ে তৎপর ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ কারণে আগুন পাশের কোনো শেডে ছড়াতে পারেনি। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তিন নম্বর শেডের প্রায় সব পণ্যই পুড়ে ছাই হয়।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, খবর পাওয়ার পরই তাদের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ উল্লাহ মুন্না নামে বন্দরের পরিবহন বিভাগের এক কর্মচারী আমাদের জানান, করোনার কারণে বন্দরের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস ইউনিটে লোকবল সংকট ছিল বলে জানতে পেরেছি। তাই তারা খবর পাওয়ার পরও দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করতে পারেনি। এ কারণে পুরো শেডটিই পুড়ে গেছে।
- « হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হল গ্রেপ্তার হওয়া রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদকে
- প্লেটে সাজিয়ে শক্তিশালী টিম দিয়েছিল ধোনিকে, প্রাক্তন এ অধিনায়ক বিষ্ফোরক দাবি। »